ইবাদতের মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজ এক বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। এই নামাজ নবী করিম ﷺ নিয়মিত পড়তেন এবং উম্মতের জন্য তা একটি অতিরিক্ত সওয়াবের উৎস। অনেকেই জানতে চান: তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত কী? কিভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে হয়? সময় কখন? রাকাত সংখ্যা কত?
এই গাইডে আপনি সহজভাবে জানতে পারবেন তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, রাকাত সংখ্যা, নিয়ত, ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
🕓 তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কখন?
তাহাজ্জুদ নামাজের সময় শুরু:
রাতের ঘুম থেকে উঠে ফজরের আজানের পূর্বে যেকোনো সময়।
সবচেয়ে উত্তম সময়:
রাতের শেষ তৃতীয়াংশ (1:30 AM – ফজর আজানের পূর্ব পর্যন্ত)।
কোরআনের বর্ণনায়:
“তুমি রাতের একাংশে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ো, এটা তোমার জন্য অতিরিক্ত (নফল) ইবাদত…”
📖 (সূরা আল-ইসরা: ৭৯)
🙏 তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাত সংখ্যা
- সর্বনিম্ন: ২ রাকাত
- সর্বোচ্চ: ৮ বা ১০ বা ১২ রাকাত, (যত খুশি পড়া যায়)
- দুই রাকাত করে সালাম ফিরিয়ে পড়া উত্তম।
🧎 তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত (বাংলা উচ্চারণসহ)
নিয়ত (২ রাকাতের জন্য):
“আমি দুই রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ কিবলামুখী হয়ে আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যে পড়ছি।”
আরবি উচ্চারণ (ইচ্ছাকৃত):
نَوَيْتُ أَنْ أُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ صَلَاةَ التَّهَجُّدِ لِلّٰهِ تَعَالٰى
📖 তাহাজ্জুদ নামাজের পদ্ধতি
১. পবিত্রভাবে ওযু করে নিন।
২. কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ান ও নিয়ত করুন।
৩. দুই রাকাত করে পড়ুন:
- প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে সূরা ইখলাস/নাস/ফালাক ইত্যাদি পড়া যেতে পারে।
- দীর্ঘ কিয়াম ও রুকু উত্তম, কোরআন তিলাওয়াত করা ভালো।
৪. সালামের পর দোয়া করুন। - রাতের সময় আল্লাহর রহমতের দরজা খোলা থাকে।
৫. শেষ রাতে উইত্র নামাজ পড়া উত্তম।
🌟 তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত
✅ আল্লাহর বিশেষ প্রিয় বান্দাদের ইবাদত
✅ কিয়ামুল লাইল হিসেবে জান্নাতের গ্যারান্টি
✅ দোয়া কবুলের সময়
✅ গুনাহ মাফের বড় সুযোগ
✅ কোরআনে প্রশংসিত ইবাদত
কোরআনে:
“তাদের পার্শ্ব শয্যা হতে আলাদা থাকে, তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায়।”📖 (সূরা সিজদা: ১৬)
🤔 ঘুম ভেঙে উঠতে কষ্ট হয়?
- ঘুমানোর আগে নিয়ত করে রাখুন
- অ্যালার্ম দিন
- রাতে কম খেয়ে ঘুমান
- নিয়মিত অভ্যাস গড়ুন
✅ উপসংহার
তাহাজ্জুদ নামাজ হলো একটি গোপন ইবাদত, যা মানুষের অন্তরকে শুদ্ধ করে ও আল্লাহর কাছে প্রিয় করে তোলে। এই নামাজ অভ্যাস করুন — আপনার জীবনে প্রশান্তি ও সফলতা আসবে ইনশাআল্লাহ।